পৃষ্ঠাসমূহ

পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১

বাতিল পন্থীদের বই-পুস্তক পড়া কেন উচিত নয়ঃ

 

 

বাতিল পন্থীদের বই-পুস্তক পড়া কেন উচিত নয়ঃ


বাতিল পন্থীদের এবং বিদআতী আকিদা-মানহাজ এর অনুসারীদের বই-পুস্তক পড়া হারাম হওয়ার প্রমাণে একটি সহীহ হাদীস পেশ করছিঃ


وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَتى رَسُولَ اللهِ ﷺ بِنُسْخَةٍ مِنْ التَّوْرَاةِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ هَذِهِ نُسْخَةٌ مِنْ التَّوْرَاةِ فَسَكَتَ فَجَعَلَ يَقْرَأُ وَوَجْهُ رَسُولِ اللهِ يَتَغَيَّرُ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ ثَكِلَتْكَ الثَّوَاكِلُ مَا تَرَى مَا بِوَجْهِ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَنَظَرَ عُمَرُ إِلى وَجْهِ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ أَعُوذُ بِاللهِ مِنْ غَضَبِ اللهِ وَغَضَبِ رَسُولِه رَضِينَا بِاللهِ رَبًّا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِه لَوْ بَدَا لَكُمْ مُوسى فَاتَّبَعْتُمُوهُ وَتَرَكْتُمُونِي لَضَلَلْتُمْ عَنْ سَوَاءِ السَّبِيلِ وَلَوْ كَانَ حَيًّا وَأَدْرَكَ نُبُوَّتِي لَاتَّبَعَنِي.


জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তাওরাত কিতাবের একটি পান্ডুলিপি এনে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এটা হলো তাওরাতের একটি পান্ডুলিপি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকলেন। এরপর ‘উমার (রাঃ) তাওরাত পড়তে আরম্ভ করলেন। (এদিকে রাগে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা বিবর্ণ হতে লাগল। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, ‘উমার! তোমার সর্বনাশ হোক। তুমি কি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিবর্ণ চেহারা মুবারক দেখছো না? ‘উমার (রাঃ) রসূলের চেহারার দিকে তাকালেন এবং (চেহারায় ক্রোধান্বিত ভাব লক্ষ্য করে) বললেন, আমি আল্লাহর গযব ও তাঁর রসূলের ক্রোধ হতে পানাহ চাচ্ছি। আমি ‘রব’ হিসেবে আল্লাহ তা‘আলার ওপর, দীন হিসেবে ইসলামের ওপর এবং নাবী হিসেবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর সন্তুষ্ট আছি। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আল্লাহর কসম, যাঁর হাতে আমার জীবন! যদি (তাওরাতের নাবী স্বয়ং) মূসা (আঃ) তোমাদের মধ্যে থাকতেন আর তোমরা তাঁর অনুসরণ করতে আর আমাকে ত্যাগ করতে, তাহলে তোমরা সঠিক সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে। মূসা (আঃ) যদি এখন জীবিত থাকতেন এবং আমার নুবূওয়্যাতের যুগ পেতেন, তাহলে তিনিও নিশ্চয়ই আমার অনুসরণ করতেন।  (মিশকাত,হা/১৯৪, দারেমী,হা/৪৩৫)


বর্ণিত অত্র হাদীসটি হাসান পর্যায়ের একটি হাদীস


যদি গভীর মনোযোগ দিয়ে তুমি এই হাদীস লক্ষ্য করো তাহলে দেখবেঃ


১. যিনি এই কিতাব তাওরাতকে নবী(সা) এর সামনে পড়ছিলেন তিনি আর কেউ নন স্বয়ং অর্ধজাহানের খলীফা উমার(রা)


আবার ২. এই কিতাব তাওরাত কোনো বিদআতী ও বাতিল পন্থীদের লিখা কিতাব নয় বরং তাওরাত হচ্ছে মুসার(আ) উপর নাযিলকৃত আসমানী কিতাব যেটি আল্লাহ নিজের হাতে লিখেছেন (মিশকাত,হা/৬১)


যদি আল্লাহর নিজের হাতে লিখা কিতাব এবং আসমানী কিতাব তাওরাতকে নবীর(সা) যমানায় স্বয়ং উমার(রা) এর মত ব্যক্তির জন্য পড়া নাজায়েজ হারাম হয় এতে রাসুলের অসন্তুষ্টি অর্জিত হয় তাহলে আজকের বিদআতী মুশরিকদের বাতিল পন্থীদের লিখিত কুরআন ও সহীহ হাদীসের অপব্যাখ্যা এবং যঈফ-জাল হাদীস সম্বলিত বই-পুস্তক পড়াটা জায়েজ হয় কীভাবে?

সহীহ আকিদার নব্য কিছু ভাই-বোন যারা আকীদা-মানহাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান রাখে না তারা বাতিল পন্থীদের এবং খাওয়ারিজ, ইখওয়ান, সহ গোমরাহ মানহাজের অনুসারীদের কিতাবাদি পড়ে তাতে ভাল কথা পেলে বলে


"অমুক ব্যক্তির আকীদা ঠিক নেই তাতে কী সমস্যা?? উনার কথাগুলো তো ভাল-ভালই"


এই গোমরাহীর জওয়াবে আমি আরেকটা হাদীস পেশ করছিঃ


وَعَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ حِيْنَ اَتَاهُ عُمَرُ فَقَالَ اِنَّا نَسْمَعُ اَحَادِيْثَ مِنْ يَّهُوْدَ تُعْجِبُنَا اَفَتَرى اَنْ نَّكْتُبَ بَعْضَهَا فَقَالَ أَمُتَهَوِّكُوْنَ اَنْتُمْ كَمَا تَهَوَّكَتِ الْيَهُوْدُ وَالنَّصَارى لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةً وَلَوْ كَانَ مُوْسى حَيًّا مَّا وَسِعَه إِلَّا اتِّبَاعِيْ. رَوَاهُ أَحْمَدُ والْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبُ الاِيْمَانِ


জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, আমরা ইয়াহূদীদের নিকট তাদের অনেক ধর্মীয় কথাবার্তা শুনে থাকি। এসব আমাদের কাছে অনেক ভালো মনে হয়। এসব কথার কিছু কি লিখে রাখার জন্য আমাদেরকে অনুমতি দিবেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ইয়াহুদী ও নাসারাগণ যেভাবে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, তোমরাও কি (তোমাদের দীনের ব্যাপারে) এভাবে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছ? আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের কাছে একটি অতি উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ দীন নিয়ে এসেছি। মূসা (আঃ)-ও যদি আজ দুনিয়ায় বেঁচে থাকতেন, আমার অনুসরণ ব্যতীত তাঁর পক্ষেও অন্য কোন উপায় ছিল না।


রেফারেন্সঃ মিশকাত,হা/১৭৭,হাসান: আহমাদ ১৪৭৩৬, বায়হাক্বী ১৭৭


হাদীসটিও হাসান সনদের অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য 


এই হাদীস গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ুন ৩-৪ বার কী দেখলেন??


স্বয়ং উমার(রা) যিনি কিনা যে রাস্তায় হাটতেন শয়তান সে রাস্তা দিয়ে চলতো না, উনার মত মানুষ বলছেন


"ইহুদিদের কিতাবের অনেক কথা আমাদের ভাল লাগে, এসব কথা কি আমরা লিখে রাখতে পারি"??


জবাবে নবী(সা) কী ছুপা রুস্তম ও মানহাজ গোপনকারী খাসী-হিজড়াদের মত বলেছিলেন যে 


" ইহূদিরা তাওরাত বিকৃত করেছে তাতে কী, তাতে অনেক ভাল কথাবার্তা তো আছে যেগুলা পড়ে কেউ হয়তো নামাজী হয়ে যাবে কেউ দাঁড়ি-টুপি রেখে দিবে কেউ বা মিথ্যা বলা,সুদ খাওয়া,হারাম ছেড়ে দিবে!!???"


আজকের মানহাজ সম্পর্কে অজ্ঞ-জাহিল ও খাসি-হিজড়া ছুপা রুস্তম দের মত নবী (সা) এই কথা বলেন না বরং সরাসরি এই  তাওরাত পড়তে নিষেধ করেছেন। কেন করলেন??


লক্ষ্য করুনঃ


১. তাওরাত একটি আসমানী কিতাব এবং সেটি মুসার(আ) মত জলীলুল কদর নবী ও রাসুলের উপর নাযিল হওয়া সত্ত্বেও নবী(সা) এই কিতাব পড়তে নিষেদ করার কারণঃ


১) যখন নবীর(সা) শরীয়ত আমাদের সামনে হাজির তখন আমাদের জন্য এটি বৈধ নয় যে আমরা অন্যকোনো শরীয়তের বই-পুস্তক পড়বো


আজকে মানহাজ গোপনকারী ছুপা রুস্তমদের একটি বিরাট অংশ


"হাদীস অস্বীকারকারী" যারা কিনা বিজ্ঞান-যুক্তি-দর্শন এর আলোকে কুরআনের অপব্যাখ্যা করে খিলাফত-বাইয়াত-জিহাদ সম্পর্কে যুবক-যুবতিদের পথভ্রষ্ট করছে যেসব বাজে কিতাব পড়ে অনেক আহলে হাদীস ভাই-বোন আহলে হাদীস আলেম-উলামাদের ব্যাপারে খারাপ ধারণা করতে শুরু করেছে

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks