"স্বামীদের গুণাবলীর মধ্য হতে অন্যতম একটি গুণ হল সহনশীল হওয়া। কারণ সে পরিবারের প্রধান। কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান যদি কথায় কথায় বিগড়ে যায়, মেজাজ খারাপ করে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান কখনো প্রতিষ্ঠিত হবে না। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন-
.
وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ
.
"তাঁদের ওপর পুরুষের একটি বিশেষ মর্যাদা আছে"[সূরা বাকারাহ : ২২৮]
.
পুরুষরা নারীর অভিভাবক। আল্লাহ তা'আলা পুরুষদেরকে নারীর চেয়ে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। তাদেরকে পরিবারের কর্তা ও প্রধান বানিয়েছেন।
.
পুরুষ হল সংসারের রাজা আর নারী হল সংসারের রাণী। এজন্য পুরুষের সহনশীল ও ধৈর্যশীল হওয়া একান্ত জরুরি। আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন, পুরুষের মধ্যে সহনশীলতা না থাকলে কথায় কথায় ঝগড়া লাগে। সামান্য বিষয় নিয়েও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়।
.
তরকারিতে লবণ হয়নি কেন?
খাবার ঠাণ্ডা কেন?
অমুক কাজটি এখনো করনি কেন?
.
বেচারি বিবি সারাদিন ঘরের কাজ করে করে ক্লান্ত, এজন্য দুটো মিঠা কথা নেই। একটু প্রশংসা বা সমবেদনা নেই। সামান্য কি কম-বেশি হয়েছে, এর জন্যই মেজাজ গরম হয়ে গেছে। চেহারার দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না।
.
মনে রাখবেন, স্বামীর মধ্যে সহনশীলতা না থাকলে দাম্পত্যজীবন তিক্ত হয়ে ওঠবে। সাধারণ সাধারণ বিষয় নিয়েও মনোমালিন্য সৃষ্টি হবে। বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়াবে। এজন্য স্বামীকে অবশ্যই সহনশীল হতে হবে, ধৈর্যশীল হতে হবে।
.
গত বছরের কথা, সুইডেন গিয়েছিলাম। সেখানে এক দম্পত্তির তালাকের ঘটনা শুনলাম। স্বামী কিচেনে এসে ব্রাশ করে। স্ত্রী তাকে এমনটি করতে নিষেধ করে। কিন্তু স্বামী স্ত্রীর নিষেধ শোনে না, জেদ ধরে সেখানেই ব্রাশ করে। এ বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। অবশেষে ছাড়াছাড়িও হয়ে যায়! ঘটনা শুনে আমি তো হতভম্ব! এটা কি তালাক হওয়ার মত কোনো ঘটনা? উভয়ে একটু ছাড় দিলে, একটুখানি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিলে এই ঘটনা ঘটে না, সংসার ভাঙে না।
.
মোটকথা ধৈর্য ও সহনশীলতা না থাকলে মানুষের পক্ষে সফল ও সুন্দর জীবনের অধিকারী হওয়া সম্ভব নয়। পরিবারের সবাই এক সাথে থাকলে ঝগড়া হতেই পারে। ছেলে-মেয়ে মা-বাবার অবাধ্য হতে পারে। মা-বাবাও ছেলে-মেয়ের উপর অসন্তুষ্ট হতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে নানা রকম সমস্যাও। আর এসব সমস্যা কেবল সেই সমাধান দিতে সক্ষম ,যার মধ্যে ধৈর্য রয়েছে, সহনশীলতা রয়েছে।
.
মোটকথা, ধৈর্য ও সহনশীলতা পুরুষের অন্যতম একটি মৌলিক গুণ। যার মধ্যে এই গুণ রয়েছে, কেবল সেই তার পরিবারকে সুন্দর ও সুচারুরূপে পরিচালনা করতে পারবে। সংসারকে শান্তি ও সুখের বানাতে পারবে"
.
~শায়খ যুলফিকার আহমদ নকশবন্দী (হাফি.)
.
.
[তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধি, পৃ: ৩৭-৩৯; অনু: আবু জারীর আবদুল ওয়াদুদ, মাকতাবাতুল আযহার]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন