ধৈর্যশীলদেরকে তো অপরিমিত পুরস্কার দেওয়া হবে।[৪]
ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার বিশ্বাসী দাসগণ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর।[১] যারা এ পৃথিবীতে কল্যাণকর কাজ করে, তাদের জন্য আছে কল্যাণ।[২] আর আল্লাহর পৃথিবী প্রশস্ত।[৩] ধৈর্যশীলদেরকে তো অপরিমিত পুরস্কার দেওয়া হবে।[৪]
[১] তাঁর আনুগত্য করে, পাপকর্ম থেকে বিরত থেকে এবং ইবাদত ও আনুগত্য বিশুদ্ধভাবে একমাত্র তাঁরই জন্য সম্পাদন করে। [২] এটা তাকওয়ার (আল্লাহ-ভীতির) উপকার। 'কল্যাণ' বলতে জান্নাত ও তার চিরস্থায়ী নিয়ামতকে বুঝানো হয়েছে। অনেকে فِيْ هَذِهِ الدُّنْيَا শব্দটিকে حَسَنَةٌ এর 'মুতাআল্লিক' (সম্পৃক্ত) ভেবে অর্থ করেছেন "যারা কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য এ পৃথিবীতে আছে কল্যাণ।" অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পৃথিবীতে সুস্থতা ও নিরাপত্তা, বিজয় ও গনীমত ইত্যাদি প্রদান করে থাকেন। তবে পূর্বের অর্থই অধিক সঠিক। [৩] এখানে এই কথার ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যদি স্বদেশে থেকে ঈমান ও তাকওয়ার উপর অটল থাকা বা শরীয়তের হুকুম-আহকাম পালন করা দুষ্কর হয়, তবে সে স্থানে বসবাস করা অপছন্দনীয়। বরং সেখান থেকে হিজরত করে এমন স্থানে চলে যাওয়া দরকার, যেখানে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা সহজ হবে এবং যেখানে ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বনের পথে কোন বাধা থাকবে না। [৪] ঈমান ও তাকওয়ার পথে কষ্ট অনিবার্য এবং প্রবৃত্তি ও আত্মার চাহিদাকেও কুরবানী করা অবধারিত। যার জন্য ধৈর্যের দরকার। এই জন্য ধৈর্যশীলদের মাহাত্ম্যও বর্ণনা করে দেওয়া হয়েছে যে, তাদেরকে তাদের ধৈর্যের প্রতিদান এমন অপরিসীম ও অগণিত রূপে দেওয়া হবে যা কোন ওজন বা হিসাবের যন্ত্র দ্বারা ওজন বা হিসাব করা সম্ভব হবে না। অর্থাৎ তাদের পুরস্কার অপরিমিত হবে। কারণ যার হিসাব করা যায়, তার একটি সীমা থাকে আর যার কোন সীমা ও শেষ নেই,তা গণনা করা অসম্ভব। এটি ধৈর্যের এমন বৃহৎ মাহাত্ম্য যা অর্জন করার চেষ্টা প্রত্যেক মুসলিমকে করা উচিত। কারণ অধৈর্য হয়ে হা-হুতাশ, ক্ষোভ প্রকাশ বা কান্না-কাটি করে কষ্ট ও বিপদ দূর করা যায় না, যে কল্যাণ ও বাঞ্ছিত জিনিস লাভে বঞ্চনা আসে, তা অর্জন করা যায় না এবং যে অপছন্দনীয় অবস্থা এসে যায়, তা দূর করা সম্ভব হয় না। অতএব মানুষের উচিত, সবর করে সেই বৃহৎ সওয়াবের অধিকারী হওয়া, যা আল্লাহ তাআলা সবরকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন