সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

মেয়েরা এবং তাদের বাবার বাড়ি

 



মেয়েরা এবং তাদের বাবার বাড়ি

পাঁচ বছরের মেয়ে বাজারে ফুচকা খেতে বায়না ধরেছিল। বাবা ফুচকা বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসা করলেন, "কত করে দিচ্ছ ভাই?"


ফুচকা বিক্রেতা বলল, "১০ টাকায় ৮টা পাবেন।"


বাবার মুখে চিন্তার রেখা ফুটে উঠল। তাঁর কাছে মাত্র ১৫ টাকা ছিল। বাকিটা বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় খরচ হয়ে গিয়েছিল। গ্রামের বাড়ি শহর থেকে অনেক দূরে, এবং ১০ টাকা বাসভাড়ায় লাগবে।


তিনি বললেন, "না ভাই, ৫ টাকার ১০টা দাও, নাহলে নেব না।"


মেয়ে অভিমানে মুখ ফুলিয়ে নিল। বাবা তার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, "চলো, এত দাম দিয়ে খাওয়ানো যাবে না।"


ফুচকা বিক্রেতা বলল, "সাহেব, খাওয়ান না। আপনার মেয়ে এখন আপনার সাথে আছে, বায়না ধরতে পারে। কাল যখন ও অন্য বাড়ির হবে, তখন আপনি তার এই ছোট ছোট ইচ্ছেগুলোর জন্য হাহাকার করবেন।"


ফুচকা বিক্রেতার এই কথা বাবার মনে গভীর দাগ কাটল। তাঁর বড় মেয়ের কথা মনে পড়ল, যার বিয়ে তিনি তিন বছর আগে অনেক স্বপ্ন নিয়ে দিয়েছিলেন।


শুরুর দিকে সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর জামাই এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ছোট বিষয় নিয়ে তিরস্কার শুরু হয়। দুই বছর ধরে বাবা তাঁর জমানো টাকা দিয়ে তাদের চাহিদা পূরণ করেন, কিন্তু তাদের লোভ বেড়েই চলেছিল। শেষে একদিন বাবা মেয়ের মৃত্যুর খবর পেলেন।


আজ বাবা ভাবেন, ইশ যদি মেয়ে ফিরে আসত! তিনি তার প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ করতেন। কিন্তু সেটা আর সম্ভব নয়।


ফুচকা বিক্রেতার ডাক বাবার চিন্তার জগৎ ভেঙে দিল। তিনি বললেন, "একটু দাঁড়াও ভাই। আমি এখনই আসছি।"


কাছের মুদির দোকান থেকে তিনি কেনা চিনি থেকে এক কেজি ফেরত দিয়ে ৪০ টাকা হাতে পেলেন।


বাবা ফিরে এসে বললেন, "এখন খাওয়াও ভাই। কিন্তু ঝালটা একটু কম রেখো, আমার মেয়ে খুব নরম মনের।"


মেয়ের চোখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠল। সে বাবার হাত শক্ত করে ধরল। ফুচকা খেয়ে আনন্দে লাফিয়ে উঠল।


মেয়েরা এবং তাদের বাবার বাড়ি


মেয়েরা খুব অদ্ভুত। যখন শ্বশুরবাড়িতে থাকে, তখন বাবার বাড়ি যাওয়ার জন্য হাপিত্যেশ করে। ভাবে, "মাকে এটা বলব, বাবাকে ওটা চাইব, বোনের সাথে মজা করব।" কিন্তু বাবার বাড়ি পৌঁছানোর পর যেন সব চুপ হয়ে যায়।


তারা কিছু চায় না, শুধু মা-বাবা, ভাই-বোনদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো মনে মনে জমিয়ে রাখে। বাবার বাড়ির যে শান্তি, তা আর কোথাও নেই।


শ্বশুরবাড়িতে যতই ভালোবাসা থাক, বাবার বাড়ির একফোঁটা হাসির জন্য মেয়েরা প্রাণপণ অপেক্ষা করে। বাবার বাড়িতে তারা কখনও কাঁদে না, কারণ তাদের একফোঁটা চোখের জল মা-বাবার মন ভেঙে দিতে পারে।


মেয়েরা: পরিবারের বন্ধনের সেতু


মেয়েরা ঈশ্বরের সবচেয়ে দামী উপহার। তারা দুই পরিবারকে একত্রিত করে। তাদের হাসি আর ভালোবাসা দিয়ে ঘরে সুখ এনে দেয়।

#viral 

আপনি যদি মেয়ের বাবা হন, তাহলে তাকে অফুরন্ত ভালোবাসা দিন। তার প্রতিটি ছোট-বড় ইচ্ছার প্রতি যত্নবান হোন। এবং এই কথাও মনে রাখুন, আপনার স্ত্রীও কারো মেয়ে। তিনি তাঁর বাবার বাড়ি ছেড়ে আপনাকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।


তাঁকে সম্মান করুন, ভালোবাসুন, এবং তাঁর অনুভূতির যত্ন নিন। কারণ সুখী পরিবারের মূলমন্ত্র হলো ভালোবাসা, সম্মান, এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া।


আমাদের প্রার্থনা


আমরা প্রার্থনা করি, পৃথিবীর সব মেয়েরা, তারা যেখানেই থাকুক, বাবার বাড়ি হোক বা শ্বশুরবাড়ি, সবসময় হাসিখুশি থাকুক। তাদের জীবন ভালোবাসা ও স্বাধীনতায় ভরে উঠুক।


সংগৃহিত 

Sagar sk 

#inspirational #dhwonidiary #love #music




কোন মন্তব্য নেই: